বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এতে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

বুধবার (৭ এপ্রিল) এই ঘটনা ঘটে। এদিন মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কালে শহরে অং সান সু চির বেসামরিক সরকার পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভ চলছিলো। বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। সেখানে পাঁচজন নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানায়, কালে শহরে বারবার গুলির শব্দ শোনা যায়।

এদিন ইয়াঙ্গুনের কাছের বাগো শহরেও গুলির ঘটনা ঘটে। এতে দুই বিক্ষোভকারী নিহত হন।

বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনে চীনের মালিকানাধীন একটি কারখানায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁরা চীনের পতাকাও পুড়িয়েছেন। গার্মেন্টস কারখানাটিতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় হতাহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

মিয়ানমারের ক্ষমতা দখলকারী সেনা কর্তৃপক্ষকে সমর্থন করছে চীন। এ কারণে চীনের ওপর মিয়ানমারের আন্দোলনকারীরা ক্ষুব্ধ। গত মাসে ইয়াঙ্গুনে চীনা বিনিয়োগ রয়েছে, এমন ৩২টি কারখানায় আগুন দেন বিক্ষোভকারীরা।

মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থীরা সেনাশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছেন। রক্তক্ষয়ী দমন-পীড়নের পাশাপশি বিক্ষোভ দমনের উপায় হিসেবে ইন্টারনেটও বন্ধ করেছে দেশটির জান্তা।

সেনা অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৫৮০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শিশুও আছে। গ্রেফতার করা হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষকে। অধিকার সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) এ তথ্য জানিয়েছে।

বিক্ষোভ, ধর্মঘট, অসহযোগের মতো আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থীরা। তবে দেশটির সেনা কর্তৃপক্ষ বলছে, এ আন্দোলন মিয়ানমারকে ধ্বংস করছে।

মিয়ানমারে গত ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থান হয়। ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। গ্রেফতার করা হয় অং সান সু চিসহ তাঁর দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) শীর্ষ নেতাদের। সেনাবাহিনী মিয়ানমারে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করে। সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে সেখানে টানা বিক্ষোভ চলছে।